

হিন্দুধর্মে দেবী দুর্গা (সংস্কৃত: दुर्गा, ব্যুৎপত্তিগত অর্থ: যিনি দুর্গ অর্থাৎ সঙ্কট হতে ত্রাণ করেন; পুরাণ অনুযায়ী: যিনি দুর্গ নামক অসুর বিনাশ করেছেন) পরমা প্রকৃতি ও সৃষ্টির আদি কারণ। দুর্গা সাধারণত দশভূজা, দশপ্রহরণধারিনী ও সিংহবাহিনী। হিন্দু পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে তিনি শিবের স্ত্রী পার্বতী, কার্তিক ও গণেশের জননী, এবং কালীর অন্যরূপ। পুরাণ অনুসারে তিনি তিনবার মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন।
দুর্গার আরাধনা বাংলা, অসম এবং বিহারের কোনো কোনো অঞ্চলে প্রচলিত। ভারতের অন্যত্র দুর্গাপূজা নবরাত্র উৎসব রূপে উদযাপিত হয়। সম্ভবত খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বাংলায় দুর্গোৎসব প্রবর্তিত হয়। বাংলায় দুর্গা মহিষাসুরমর্দিনী রূপে পূজিতা হলেও তাঁর কাত্যায়নী মূর্তিরই পূজা হয়। মহিষমর্দিনীর প্রতিমা বর্তমানে তামিলনাড়ুতে প্রচলিত।
দুর্গা মূলত শক্তি দেবী। বৈদিক সাহিত্যে দুর্গার উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে দুর্গার বিশেষ আলোচনা ও পূজাবিধি তন্ত্র ও পুরাণেই প্রচলিত। যেসকল পুরাণ ও উপপুরাণে দুর্গা সংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে সেগুলি হল: মৎস্যপুরাণ, মার্কণ্ডেয় পুরাণ, দেবীপুরাণ, কালিকাপুরাণ ও দেবী-ভাগবত। তিনি জয়দুর্গা, জগদ্ধাত্রী, গন্ধেশ্বরী, বনদুর্গা, চণ্ডী, নারায়ণী প্রভৃতি নামেও পূজিতা হন। বছরে দুইবার দুর্গোৎসবের প্রথা রয়েছে – আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে শারদীয়া এবং চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে বাসন্তী দুর্গাপূজা।
No comments:
Post a Comment