

বিয়ে হয়েছে আট বছর বয়সে। এখন বয়স মাত্র ১২।বাস করছে শ্বশুর বাড়িতে, ঐ বাড়ির কড়া অনুশাসনের মধ্যে-মাঝে মাঝেই আমরা এই কাহিনী শুনতে অভ্যস্ত হলেও এখানে বলা হচ্ছে টিলিভিশনের মেগা সিরিয়াল ‘বালিকা বধূ’র কথা।
মিত আনন্দি অভিনয় শুরু করলেন৷ অনবদ্য অভিনয়৷ এই নাটকে তাকে ভালো অভিনয় করতেই হবে৷ কারণ, নাম ভূমিকাতেই যে সে৷ ভারতীয় চ্যানেল কালার্সে এক বছরের কিছু বেশি সময় ধরে চলছে মেগা সিরিয়াল ‘বালিকা বধূ৷ একে এখন কেবল মেগা সিরিয়াল বলেই ক্ষান্ত নন টেলিভিশন সমালোচকরা৷ তারা একে বলছেন এটি এ সময়ের সবচেয়ে হিট সিরিয়াল৷ ডেইলি সোপ হিসাবে প্রচারিত হচ্ছে এই নাটক৷ এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, গত জুলাই মাসে অন্তত সাত কোটি ৪০ লাখ মানুষ দেখেছে এই সিরিয়ালটি৷
ভারত এবং বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোর মত উপমহাদেশের দেশগুলোয় বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ৷ ১৯২৯ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ ব্রিটিশ আইনেও তা স্পষ্ট৷ ঐ আইন অনুসারে বাল্যবিবাহ বলতে বোঝায়, বাল্যকাল বা নাবালক বয়সে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বিয়ে৷ এছাড়া বর-কনে উভয়েরই বা একজনের বয়স বিয়ের নির্ধারিত বয়সের চেয়ে কম বয়সে বিয়ে হলে তা আইনত বাল্যবিবাহ বলে চিহ্নিত হবে৷ এ আইনে স্পষ্ট করে বলা আছে, বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলের বয়স ২১ এবং মেয়ের বয়স ১৮ হওয়া বাঞ্ছনীয়৷ কিন্তু আইন থাকার পরও এ ধরণের ঘটনা ঘটছে৷ কালার্স টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাজেস কামাত বললেন, তারা এই সিরিয়ালটি তৈরি করার আগে বাল্য বিবাহ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান এবং গবেষণা চালিয়েছেন৷ তারা দেখেছেন এই বিবাহের কুফলগুলোও৷ এবং বালিকা বধূ সব কিছু মিলিয়েই করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ভারতের মাটিতে ঘটে যাওয়া এমন অনেক সত্যি কাহিনীর সঙ্গে এই নাটকের কাহিনীর বেশ সাদৃশ্য রয়েছে৷
কিন্তু তবুও ভারতের বিভিন্ন স্থানে এখনো ঘটছে বাল্য বিবাহের ঘটনা৷ অবশ্য এর সঠিক কোন সংখ্যা বা হিসাব সরাসরি পাওয়া না গেলেও ইউনিসেফ বলছে বিশ্বের যে সকল স্থানে বাল্য বিবাহের ঘটনা ঘটছে, তার অন্তত ৪০ ভাগ হচ্ছে কেবল ভারতেই৷
কিন্তু বর্তমানে ভারতের নানাস্থানে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে দেশের নাবালিকারাই। কে বলতে পারে ‘বালিকা বধূ’’র মত সিরিয়ালগুলোই হয়তো অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
No comments:
Post a Comment